তহবিল সংকটে রোহিঙ্গা সহায়তা: মানবিক নৈরাজ্যের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরগুলো

তহবিল সংকটে রোহিঙ্গা সহায়তা: মানবিক নৈরাজ্যের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশে শরণার্থী শিবিরগুলো


নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীর মানবিক সহায়তা কার্যক্রম বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তার মুখে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (UNHCR) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০২৫ সালের জন্য নির্ধারিত ২২৫.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সহায়তা তহবিলের বিপরীতে এখনও পর্যন্ত সংগৃহীত হয়েছে মাত্র ৩৫ শতাংশ অর্থ। অর্থাৎ, প্রকল্পের বাস্তবায়নে যে পরিমাণ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রত্যাশিত ছিল, বাস্তবতা তা থেকে অনেক দূরে।

এই ঘাটতির পরিণতি শুধু হিসাবের ফাঁকে আটকে থাকা কোনো আর্থিক বিষয় নয়—বরং তা সরাসরি প্রভাব ফেলছে লাখো মানুষের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদার উপর। খাদ্য, চিকিৎসা, পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও আশ্রয়সেবার ওপর নির্ভরশীল এই জনগোষ্ঠী এখন এক নিঃশব্দ বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে।

বিশ্ব রাজনীতির গতিপথ ও সাম্প্রতিক ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা—বিশেষত ইউক্রেন যুদ্ধ ও উন্নত দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ আর্থিক অস্থিরতা—মানবিক সহায়তার ওপর ছায়া ফেলেছে। পরিণতিতে, বাংলাদেশের মতো সীমিত সম্পদসম্পন্ন একটি উন্নয়নশীল দেশ তার কাঁধে বহন করে চলেছে একটি জটিল আন্তর্জাতিক সঙ্কট।

রোহিঙ্গাদের জীবন বর্তমানে শতভাগ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। এ প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘের এই সতর্কবার্তা এক গভীর উদ্বেগের ইঙ্গিত দেয়—যেখানে শুধু অর্থের ঘাটতি নয়, বরং আন্তর্জাতিক ন্যায়বোধ ও নৈতিক দায়িত্ববোধের সঙ্কোচন আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যেন এ সংকট নিরসনে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। কারণ, শুধু একটি দেশের পক্ষে দীর্ঘমেয়াদে এই বোঝা বহন করা বাস্তবসম্মত নয়। বিশ্ব সম্প্রদায়ের সম্মিলিত দায়িত্ব ও মানবিক প্রতিশ্রুতিই কেবল এই ক্রান্তিকালীন পরিস্থিতিকে কিছুটা হলেও প্রশমিত করতে পারে।

তথ্যসূত্র: রয়টার্স, ১১ জুলাই ২০২৫

নবীনতর পূর্বতন